Posts

 মানুষের সুদৃঢ় সংকল্পই তাকে মহান করে তোলে। সুদৃঢ় সংকল্প বলেই অতি সাধারণ মানুষও অসাধারণত্বের পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। তাই লক্ষ্যে পৌঁছবার জন্যে যদি তোমার বজ্রকঠোর সংকল্প থাকে তবে তুমিও একদিন মহান হবে। মনে রেখো এই বজ্রকঠোর সংকল্প ব্যতিরেকে জীবনে মহৎ কোন কিছুই লাভ করা যায় না।  -- শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তি (আনন্দ বচনামৃতম্, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৪৬)
 সমাজে যারা পাপী --- যারা অন্যের ক্ষতি করছে, তাদের বেশীর ভাগই শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী। যারা অশিক্ষিত তারা সহজ সরল হয়। তাদের দ্বারা সমাজে খুব কমই ক্ষতি হয়। তাই যারা শিক্ষিত হয়ে বুদ্ধির অপপ্রয়োগ করে তাদের আমি বলেছি Polished Satan --- মার্জিত শয়তান। এদের বেশবাস খুব সুন্দর, কথাবার্তা সুন্দর, কিন্তু ভেতরটা নোংরা। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধরণের কম দেখা যায়। -- শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তি  (আনন্দবচনামৃতম, চতুর্দশ, পঞ্চদশ, ষোড়শ খণ্ড, পৃঃ ১৫৭) 
 এখন এই সেবার যথার্থ স্বরূপটা কী? পরমপুরুষের সৃষ্ট জগতের সেবা করাই সত্যিকারের সেবা। আমরা বাস্তব জগতে লক্ষ্য করি যখন কোন অভিভাবক দেখেন যে কেউ তাদের পুত্র-কন্যার সেবা করছে তখন তারা সেই সেবকের প্রতি সন্তুষ্ট হন। অনুরূপভাবে পরমপুরুষের সৃষ্ট জীবজগতের, বিশেষ করে মানুষের সেবা করাই পরমপুরুষকে সন্তুষ্ট করার সব চেয়ে সহজ উপায়। অতীতে তুমি কী ছিলে, কী করেছিলে সে সব কথা বেমালুম ভূলে গিয়ে এই শুভ মূহুর্ত থেকে মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করো। পরমপুরুষ তাতে সন্তুষ্ট হবেন আর পরম পুরুষের সেই সন্তোষেই নিহিত রয়েছে মানব জীবনের পরমা সম্প্রাপ্তির চাবিকাঠি।  -- শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তি  (আনন্দ বচনামৃতম্, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৫৩)
 আমি চাই তোমরা উত্তম শ্রেণীর মানুষ হও। তোমরা সর্বদাই লক্ষের কথা চিন্তা করো। সব সময় নিজেদের আদর্শের দিকে লক্ষ্য রেখো। আর এইভাবে আধ্যাত্মিক প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের নীতিকে, নিজের আদর্শকে কঠোরভাবে মেনে চলো।  -- শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তি (আনন্দ বচনামৃতম্, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৩৬)
 আনন্দমার্গ দর্শন অনুযায়ী স্বর্গ বলে কিছু নেই। সুতরাং তোমরা কখনো কাউকে অসহায় বলে ভাবতে দেবেনা। পরম পুরুষ স্বর্গ ও নরক (যদি কোথাও থাকে) সর্বত্র আছেন। কাজেই তুমি কখনো একলা নও। তোমরা কখনো অসহায় মানসিকতাকে প্রৎসাহিত করবে না। পরমপুরুষ সদা সর্বদা তোমার সঙ্গে আছেন। শুধু তাই নয়, তিনি সর্বদাই তোমাকে ভালোবাসেন। তাই তুমি কোন প্রকার হীনমন্যতাকে প্রশ্রয় দিও না। সেই পরম পুরুষকেই নিজের জীবনের একমাত্র ধ্যেয় করে নাও, আর তাকে জেনে মুক্তি লাভ করো।  -- শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তি (আনন্দ বচনামৃতম্, ১ম খণ্ড, পৃঃ ১৮)
 ভক্ত সব সময় বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করে। জ্ঞানী করে কী? --- না, ধর্মশাস্ত্রের বা তর্ক শাস্ত্রের হাজার সমস্যা নিয়ে অযথা মাথা ঘামায়। কিন্তু ভক্ত, ধর্মশাস্ত্রের সারাংশ আত্মসাৎ করে। ভক্ত জেনে বুঝে পরমপুরুষের শরণ নেয়। যদি পরমপুরুষকে ধরি একটা জাহাজ....একটা প্রকাণ্ড ৰড় জাহাজ, ভক্ত করে কী? --- না, সে সেই প্রকাণ্ড জাহাজরূপী পবমপুকষে চেপে বসে ও নিশ্চিন্ত নিরুদ্ধেগে এই ভবসমুদ্র পার হয়ে যায়। (আনন্দ বচনামৃতম্, ১ম খণ্ড, পৃঃ ১২)
 প্রণিপাত, পরিপ্রশ্ন ও সেবা -- এই তিনটি তত্ত্বকে মেনে চললে মানুষের  আধ্যাত্মিক প্রগতি হবেই। এছাড়া অন্য কোন কিছু তোমার উপকারে আসবে না। মনে রেখো, অতি স্বল্পকালের জন্যেই তুমি এই পৃথিবীতে এসেছ। তাই তোমার সময় ও সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করো, মনের মধ্যে যথার্থ সেবার মনোভাব পোষণ করে জগতের সেবা করে যাও; জাগতিক মানসিক ও আধ্যাত্মিক জীবনের সকল তরে সর্বাত্মক সেবার. কাজ চালিয়ে যাও। (আনন্দ বচনামৃতম্, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৮)